মঙ্গলবার । ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ । ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে বসছে সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা

গেজেট প্রতিবেদন

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে বসছে সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বেলা ৩টায় সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য এই ফুলকোর্ট সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধান বিচারপতি।

দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবারের সভাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জানা গেছে, আইন মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি পাঠানো নিম্ন আদালতের এক হাজার একশতাধিক বিচারকের পদোন্নতি সংক্রান্ত প্রস্তাব এবং পৃথক সচিবালয় গঠনের বিষয়সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এ সভায় আলোচনা হতে পারে।

সভা সূত্রে জানা গেছে, পদোন্নতির প্যানেলে রয়েছেন— অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদে ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ জন, সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে এবারের পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ফুলকোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদোন্নতি সংক্রান্ত পদক্ষেপ নেবে আইন মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রধান বিচারপতির উদারতার সুযোগে অতীতে আওয়ামী লীগের সময় সুবিধাপ্রাপ্ত একটি বিতর্কিত গ্রুপ এবারও পদোন্নতি নিশ্চিত করতে সক্রিয় রয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘বিগত সময়ে দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রায় শতাধিক নিম্ন আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫৩ জনের তালিকা আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পেলে তারা আমাদের অবহিত করবে। কিন্তু এত মাস পেরিয়ে গেলেও দুদককে এ বিষয়ে কোনো আপডেট জানানো হয়নি।’

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা বলেন, সম্প্রতি ১৯১টি জেলা জজের পদ সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত পৃথক করায় নতুন আদালতও গঠিত হয়েছে। এ কারণেই এতো সংখ্যক বিচারকের পদোন্নতির জন্য বড় পরিসরে প্যানেল তৈরি করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানায়, এবারের ফুলকোর্টে ২০২৬ সালের ক্যালেন্ডার ও পদোন্নতি সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। আড়াই শতাধিক নতুন পদ সৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন ব্যাচের একসঙ্গে পদোন্নতির প্রস্তাব এসেছে। ফলে এবারের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।

প্রক্রিয়াগতভাবে, বিচারকদের পদোন্নতির জন্য প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির পর্যালোচনার পর বিষয়টি ফুলকোর্ট সভায় তোলা হয়। সভায় অনুমোদন পেলে প্রস্তাবটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (অথবা প্রধান উপদেষ্টা) হয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রাপ্তির পর প্যানেলটি আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়া সাপেক্ষে সময়ে সময়ে পদোন্নতির আদেশ জারি করা হয়।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা, ২০০৭ অনুযায়ী— সহকারী জজদের সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য কমপক্ষে ৪ বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত রয়েছে, সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্যও দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়।

তবে অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় এই বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয় না।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন